4.কুরআনের আলোকে নামাযের গুরত্ব
কুরআনের আলোকে নামাযের গুরত্ব
বর্তমান সময়ে মুসলিম ভাইদের নামায বর্জন করা একটি স্বাভাবিক কর্মনীতি হয়ে দাড়িয়েছে অথচ এই নামায হল দ্বীন ইসলামের একটি মৌলিক বিধান। মহানবীর পূর্বে অন্যান্য নবী রাসুলদের উম্মতের উপরও স্রষ্টার পক্ষ থেকে এই নামায ফরজ করা হয়েছিল। সম্ভবত এমন কোন রাসুল নেই স্বজাতীকে ঈমানের পাশাপাশি নামাজ বা সালাত আদায়ের প্রতি তার উম্মতকে আহবান জানায়নি। অতিত ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি প্রসারিত করলে দেখা যায় অধিকাংশ উম্মত রাসুলদের আনীত জীবন ব্যবস্থাকে মেনে নেয়নি। ঈমানের পথে রাসুলদের আহবান তাদের অন্তরে যেন তীরের মত বিদ্ধ হত !
অতিতে অধিকাংশ জাতী নবী রাসুলদের আনীত জীবন দর্শন অমান্য করে জাহেলিয়াতের তীমির অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিল। স্রষ্টার পবিত্র পথ বর্জন করে জাহেলিয়াতের সেই অন্ধকার গলিতে এমনভাবে তারা নির্ভয়ে বাস করছিল যার ফলে কোন দিন তারা ভাবতেই পারেনি এক আকস্মিক হামলার মাধ্যমে তাদের জীবন রহিত করে দেওয়া হবে। বস্তুত অধিকাংশ জাতীর ক্ষেত্রে হয়েছেও তাই। আক্ষেপের বিষয় হল অতিতে সেই ধ্বংশ প্রাপ্ত জাতীকে অনুসরন করে চলমান শতাব্দির অধিকাংশ মুসলিম নরনারী দ্বীন ইসলামের মৌলিক বিধানগুলোকে অবহেলার ছুড়ি দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছে ! বিশেষ করে ঈমানের পর নামায আদায়ের বিষয়ে পবিত্র কুরআনে বিশ্বস্রষ্টার প্রায় শতাধিক আদেশ ছিল। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ‘‘নিঃসন্দেহে নামাজ কঠিন কাজ, কিন্তু সেই সমস্ত অনুগত লোকদের জন্য কঠিন নয় যারা মনে করে তাদেরকে একদিন তাদের রবের নিকট (নিজেদের জীবন কর্ম নিয়ে) ফিরে যেতে হবে’’ ভয়ংকর এই আয়াতে সেই সমস্ত চিন্তাশীল লোকদের জন্য ভীতির উপাদান রয়েছে যারা তাদের বিবেক সত্বাকে জাগ্রত মনে করে। জাগ্রত এই বিবেকবান লোকদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট হল তারা প্রতিনিয়ত তাদের জীবন সমাপ্তির ব্যপাড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার পথ অবলম্বন করে। তারা ভয় করে এমন এক আকস্মিক হামলার যে হামলা সতেজ দেহ থেকে শক্তিমান অদৃশ্য আত্বাকে বিচ্ছিন্ন করে এক অন্ধকার জবাবদীহিতার আরন্যে নিয়ে যায়। বস্তুত যাদের মনোজগতে তাদের মন্দ কর্মনীতির জন্য জবাবদীহিতার অনুভুতি নেই তারা এই আকস্মিক হামলাকে বহুদুর মনে করে ধোকায় পরে যায় আর ভেবে থাকে মৃত্যু সম্ভবত বহুদুর! যে সমস্ত ঈমানী চেতণা সম্পন্ন লোকদের অন্তরজগতে এই অনুভুতি জাগ্রত থাকে যে, হয়ত কিছুক্ষন পর তার অনাকাঙ্ক্ষিত এক অনন্ত যাত্রার পালা ! তা হলে স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে নির্ভয়ে জীবন অতিবাহিত করা তাদের পক্ষে কেমন করে সম্ভব হতে পারে ? কেমন করে এক মহা পরাক্রমশালী স্রষ্টার আদেশ (নামায) থেকে তারা পৃষ্ট পদর্শন করতে পারে ? পবিত্র কুরআনের অসংখ্য আয়াতে বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহপাক মুসলিমজাতীকে নামাযের তাগিদ দিয়েছেন। বিশ্বজনীন জীবন দর্শনের সম্রাট মহানবী (সাঃ) অসংখ্য হাদিসের মাধ্যমে মুসলিম জাতীকে নামাযের তাগিদ দিয়েছেন এবং ইহলোকে ও পরলোকে একে সফলতা ব্যর্থতার মাপকাঠি নির্ধারন করেছেন। সাহাবায়েকেরাম, তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ীন সহ সকল যুগের সমস্ত মুসলিম দার্শনিক ও পীর মাশায়েখগন এই নামাযকে (ইহলোক ও পরলোকে) সফলতা ব্যর্থতার মাপকাঠি নির্ধারন করেছেন। বস্তুত নামাজ আদায় না করা যে এক বিরাট পথভ্রষ্টতা এবং মহান রবের সঙ্গে কুফরি বিগত চৌদ্দশত বৎসর যাবৎ সাহাবায়েকেরাম, তাবেয়ী, তাবেতাবেয়ীন এবং চার মাযহাবের চার ইমামের মধ্যে এই বিষয়ে কোন মতভেদ হয়নি। ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় এই বিষয়ে এতবড় ইজমা ও সকলের সুষ্পষ্ট সতর্কবাণী থাকার পরও চলমান শতাব্দিতে মুসলিম জাতীর একটি বিরাট অংশ আজ নামায আদায়ে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে ফলে আল্লাহ তায়ালাও তাদেরকে আত্বভোলা বানিয়ে রেখেছেন। মুসলিম জাতীর এই নেতিবাচক কর্মনীতিতে পরজগতে যেমন বিরাট অকল্যান লুকায়িত ঠিক তেমনিভাবে ইহজগতেও এই কর্মনীতি এক বিরাট নেতিবাচক প্রভাব রেখে যাচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ ভেবে থাকে নামায নিছক প্রভুকে পূজা উপাসনা মাত্র অথচ অতিতে মুসলিম দার্শনিকগন স্রষ্টার সন্তুষ্টির পাশাপাশি নামাযের ইহজাগতিক অসংখ্য উপকারিতার কথাও তাদের কিতাবে ব্যক্ত করেছেন। যেমন নামায মুসলিমদের একতাবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে শিক্ষা দেয়। নামায বর্জন করার ফলে তারা আজ একই সমাজে বসবাস করা সত্বেও প্রত্যেকের হৃদয় বিচ্ছিন্ন। নামায পরিত্যাগ করার ফলে মুসলিম ভ্রাতৃত্ব অনেকটাই বিনষ্ট হয়েছে। নামায বর্জন করে মুসলিম উম্মাহ তাদের আধ্বাত্বিক সত্বাকে হারিয়েছে, এমনকি নামায বর্জন করে তারা ইহজাগতিক উন্নতি থেকেও অনেক পিছিয়েছে কেননা নামায আদায়ে ইহজাগতিক কল্যানের বিষয়টিও সাহাবাদের জীবন দর্শন দ্ধারা প্রমানিত। সাহাবীগন নামাজ আদায়ের মাধ্যমে অনেক বড় বড় কাজ সমাধা করেছেন ইতিহাসে এমন বহু প্রমান আছে। সাহাবীগন যখন কোন সমস্যার সম্মুখিন হতেন তখন তারা নবী মোহাম্মদের শিক্ষা অনুযায়ী নামাযে দাড়িয়ে যেতেন এরই ফলে তাদের প্রায় সমস্যা সমাধান হয়ে যেত ! একথা আজ কে অবিশ্বাস করে যে মানব সম্প্রদায় ধর্মিয় অনুশাসন মেনে না চললে তাদের মধ্যে চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের পথ প্রশস্ত হতে থাকে। সম্ভবত মানব রচিত মতাদর্শের অনুগামীরাও সমাজে ধর্মহীনতার নেতিবাচক প্রভাবকে এখন আর অস্বীকৃতি জানায় না যার ফলে এই সমস্ত মতাদর্শের অনেক নেতাই এখন ধর্মিয় অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করে ! সহীহ হাদিসে মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেন ‘‘(হে মুসলিম জাতী) তোমরা জেনে রেখ, ইমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে একমাত্র নামায’’ এই হাদিসের সহজ ব্যক্ষা হচ্ছে যারা এই নামাযকে সংরক্ষন করবে তারা বিশ্ব স্রষ্টার নিকট ইমানদার রূপে পরিগনিত হবে পক্ষান্তরে যারা একে আদায়ে অস্বীকৃতি জানাবে তারা কুফরে লিপ্ত রয়েছে বলে গন্য হবে। জগৎ বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক ‘‘ইমাম আল গাজ্জালী’’ তার মুকাশাফাতুল কুলুব গ্রন্থের ২৭০ পৃষ্টায় তিরমিযী শরিফের একটি হাদিস উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন ‘‘মহানবীর সাহাবীগন একমাত্র সালাত ব্যতিত অন্য কোন এবাদত ছেড়ে দেওয়াকে কুফর মনে করতেন না’’ উক্ত গ্রন্থের ২৭১ পৃষ্টায় উল্লেখ করেছেন ‘‘মহানবীর যামানা থেকে সমস্ত বিজ্ঞ ব্যক্তি এ বিষয়ে একমত যে, কোন ওযর ব্যতিত কেহ নামায ছেড়ে দিলে সে কাফেররূপে বিবেচিত হবে’’ একই পৃষ্টায় মুসলিম মনীষী হযরত আইয়ুব (রাহঃ) এর উক্তি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি বলেছেন ‘‘নামায পরিত্যাগ করা কুফরী এই বিষয়ে কাহারো মধ্যে কোন মতভেদ নেই’’ এখন আমি পবিত্র কুরআনের এমন কতিপয় আয়াত উল্লেখ করছি যেগুলোর দৃষ্টিপাত করলে নামায অনাদায়ের ভয়াবহতার বিষয়ে কাহারো মনোজগতে আর কোন সন্দেহ থাকবে না। পবিত্র কুরআনে মুসলিম জাতীকে লক্ষ্য করে বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহপাক এরশাদ করেন
অতিতে অধিকাংশ জাতী নবী রাসুলদের আনীত জীবন দর্শন অমান্য করে জাহেলিয়াতের তীমির অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিল। স্রষ্টার পবিত্র পথ বর্জন করে জাহেলিয়াতের সেই অন্ধকার গলিতে এমনভাবে তারা নির্ভয়ে বাস করছিল যার ফলে কোন দিন তারা ভাবতেই পারেনি এক আকস্মিক হামলার মাধ্যমে তাদের জীবন রহিত করে দেওয়া হবে। বস্তুত অধিকাংশ জাতীর ক্ষেত্রে হয়েছেও তাই। আক্ষেপের বিষয় হল অতিতে সেই ধ্বংশ প্রাপ্ত জাতীকে অনুসরন করে চলমান শতাব্দির অধিকাংশ মুসলিম নরনারী দ্বীন ইসলামের মৌলিক বিধানগুলোকে অবহেলার ছুড়ি দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছে ! বিশেষ করে ঈমানের পর নামায আদায়ের বিষয়ে পবিত্র কুরআনে বিশ্বস্রষ্টার প্রায় শতাধিক আদেশ ছিল। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ‘‘নিঃসন্দেহে নামাজ কঠিন কাজ, কিন্তু সেই সমস্ত অনুগত লোকদের জন্য কঠিন নয় যারা মনে করে তাদেরকে একদিন তাদের রবের নিকট (নিজেদের জীবন কর্ম নিয়ে) ফিরে যেতে হবে’’ ভয়ংকর এই আয়াতে সেই সমস্ত চিন্তাশীল লোকদের জন্য ভীতির উপাদান রয়েছে যারা তাদের বিবেক সত্বাকে জাগ্রত মনে করে। জাগ্রত এই বিবেকবান লোকদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট হল তারা প্রতিনিয়ত তাদের জীবন সমাপ্তির ব্যপাড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার পথ অবলম্বন করে। তারা ভয় করে এমন এক আকস্মিক হামলার যে হামলা সতেজ দেহ থেকে শক্তিমান অদৃশ্য আত্বাকে বিচ্ছিন্ন করে এক অন্ধকার জবাবদীহিতার আরন্যে নিয়ে যায়। বস্তুত যাদের মনোজগতে তাদের মন্দ কর্মনীতির জন্য জবাবদীহিতার অনুভুতি নেই তারা এই আকস্মিক হামলাকে বহুদুর মনে করে ধোকায় পরে যায় আর ভেবে থাকে মৃত্যু সম্ভবত বহুদুর! যে সমস্ত ঈমানী চেতণা সম্পন্ন লোকদের অন্তরজগতে এই অনুভুতি জাগ্রত থাকে যে, হয়ত কিছুক্ষন পর তার অনাকাঙ্ক্ষিত এক অনন্ত যাত্রার পালা ! তা হলে স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে নির্ভয়ে জীবন অতিবাহিত করা তাদের পক্ষে কেমন করে সম্ভব হতে পারে ? কেমন করে এক মহা পরাক্রমশালী স্রষ্টার আদেশ (নামায) থেকে তারা পৃষ্ট পদর্শন করতে পারে ? পবিত্র কুরআনের অসংখ্য আয়াতে বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহপাক মুসলিমজাতীকে নামাযের তাগিদ দিয়েছেন। বিশ্বজনীন জীবন দর্শনের সম্রাট মহানবী (সাঃ) অসংখ্য হাদিসের মাধ্যমে মুসলিম জাতীকে নামাযের তাগিদ দিয়েছেন এবং ইহলোকে ও পরলোকে একে সফলতা ব্যর্থতার মাপকাঠি নির্ধারন করেছেন। সাহাবায়েকেরাম, তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ীন সহ সকল যুগের সমস্ত মুসলিম দার্শনিক ও পীর মাশায়েখগন এই নামাযকে (ইহলোক ও পরলোকে) সফলতা ব্যর্থতার মাপকাঠি নির্ধারন করেছেন। বস্তুত নামাজ আদায় না করা যে এক বিরাট পথভ্রষ্টতা এবং মহান রবের সঙ্গে কুফরি বিগত চৌদ্দশত বৎসর যাবৎ সাহাবায়েকেরাম, তাবেয়ী, তাবেতাবেয়ীন এবং চার মাযহাবের চার ইমামের মধ্যে এই বিষয়ে কোন মতভেদ হয়নি। ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় এই বিষয়ে এতবড় ইজমা ও সকলের সুষ্পষ্ট সতর্কবাণী থাকার পরও চলমান শতাব্দিতে মুসলিম জাতীর একটি বিরাট অংশ আজ নামায আদায়ে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে ফলে আল্লাহ তায়ালাও তাদেরকে আত্বভোলা বানিয়ে রেখেছেন। মুসলিম জাতীর এই নেতিবাচক কর্মনীতিতে পরজগতে যেমন বিরাট অকল্যান লুকায়িত ঠিক তেমনিভাবে ইহজগতেও এই কর্মনীতি এক বিরাট নেতিবাচক প্রভাব রেখে যাচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ ভেবে থাকে নামায নিছক প্রভুকে পূজা উপাসনা মাত্র অথচ অতিতে মুসলিম দার্শনিকগন স্রষ্টার সন্তুষ্টির পাশাপাশি নামাযের ইহজাগতিক অসংখ্য উপকারিতার কথাও তাদের কিতাবে ব্যক্ত করেছেন। যেমন নামায মুসলিমদের একতাবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে শিক্ষা দেয়। নামায বর্জন করার ফলে তারা আজ একই সমাজে বসবাস করা সত্বেও প্রত্যেকের হৃদয় বিচ্ছিন্ন। নামায পরিত্যাগ করার ফলে মুসলিম ভ্রাতৃত্ব অনেকটাই বিনষ্ট হয়েছে। নামায বর্জন করে মুসলিম উম্মাহ তাদের আধ্বাত্বিক সত্বাকে হারিয়েছে, এমনকি নামায বর্জন করে তারা ইহজাগতিক উন্নতি থেকেও অনেক পিছিয়েছে কেননা নামায আদায়ে ইহজাগতিক কল্যানের বিষয়টিও সাহাবাদের জীবন দর্শন দ্ধারা প্রমানিত। সাহাবীগন নামাজ আদায়ের মাধ্যমে অনেক বড় বড় কাজ সমাধা করেছেন ইতিহাসে এমন বহু প্রমান আছে। সাহাবীগন যখন কোন সমস্যার সম্মুখিন হতেন তখন তারা নবী মোহাম্মদের শিক্ষা অনুযায়ী নামাযে দাড়িয়ে যেতেন এরই ফলে তাদের প্রায় সমস্যা সমাধান হয়ে যেত ! একথা আজ কে অবিশ্বাস করে যে মানব সম্প্রদায় ধর্মিয় অনুশাসন মেনে না চললে তাদের মধ্যে চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের পথ প্রশস্ত হতে থাকে। সম্ভবত মানব রচিত মতাদর্শের অনুগামীরাও সমাজে ধর্মহীনতার নেতিবাচক প্রভাবকে এখন আর অস্বীকৃতি জানায় না যার ফলে এই সমস্ত মতাদর্শের অনেক নেতাই এখন ধর্মিয় অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করে ! সহীহ হাদিসে মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেন ‘‘(হে মুসলিম জাতী) তোমরা জেনে রেখ, ইমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে একমাত্র নামায’’ এই হাদিসের সহজ ব্যক্ষা হচ্ছে যারা এই নামাযকে সংরক্ষন করবে তারা বিশ্ব স্রষ্টার নিকট ইমানদার রূপে পরিগনিত হবে পক্ষান্তরে যারা একে আদায়ে অস্বীকৃতি জানাবে তারা কুফরে লিপ্ত রয়েছে বলে গন্য হবে। জগৎ বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক ‘‘ইমাম আল গাজ্জালী’’ তার মুকাশাফাতুল কুলুব গ্রন্থের ২৭০ পৃষ্টায় তিরমিযী শরিফের একটি হাদিস উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন ‘‘মহানবীর সাহাবীগন একমাত্র সালাত ব্যতিত অন্য কোন এবাদত ছেড়ে দেওয়াকে কুফর মনে করতেন না’’ উক্ত গ্রন্থের ২৭১ পৃষ্টায় উল্লেখ করেছেন ‘‘মহানবীর যামানা থেকে সমস্ত বিজ্ঞ ব্যক্তি এ বিষয়ে একমত যে, কোন ওযর ব্যতিত কেহ নামায ছেড়ে দিলে সে কাফেররূপে বিবেচিত হবে’’ একই পৃষ্টায় মুসলিম মনীষী হযরত আইয়ুব (রাহঃ) এর উক্তি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি বলেছেন ‘‘নামায পরিত্যাগ করা কুফরী এই বিষয়ে কাহারো মধ্যে কোন মতভেদ নেই’’ এখন আমি পবিত্র কুরআনের এমন কতিপয় আয়াত উল্লেখ করছি যেগুলোর দৃষ্টিপাত করলে নামায অনাদায়ের ভয়াবহতার বিষয়ে কাহারো মনোজগতে আর কোন সন্দেহ থাকবে না। পবিত্র কুরআনে মুসলিম জাতীকে লক্ষ্য করে বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহপাক এরশাদ করেন
১। নিঃসন্দেহে নামায কঠিন কাজ। কিন্তু তাদের জন্য নয় যারা মনে করে তাদেরকে একদিন (তাদের জীবন কর্ম নিয়ে) তাদের রবের নিকট ফিরে যেতে হবে। আল বাক্কারা ৪৬।
২। (পূর্বের ঈমানদার লোকদের অবস্থা ছিল এই) যখন তাদের সামনে করুনাময় প্রভুর আয়াত শুনানো হত তখন তারা (খোদার ভয়ে) কান্নারত অবস্থায় সিজদায় (মাটিতে) লুটিয়ে পড়ত। পরবর্তিতে এমন সব নির্বোধ লোক স্থলাভিষিক্ত হল যারা নিজেদের নামায ধ্বংশ করল এবং হয়ে গেল প্রবৃত্তির দাস। অতি শিঘ্রই তারা (এই জঘন্য কর্মের জন্য ভয়ংকর) এক পরিনতির সম্মুখিন হবে। সুরা মারইয়াম ৫৮, ৫৯।
৩। নিশ্চয়ই বিশ্বাসী লোকদের উপর যথাসময়ে নামায সম্পাদন ফরজ করা হয়েছে। উক্ত আয়াতের সুরা আমার স্বরণ নেই।
৪। সর্বনাশ সেই সমস্ত নামাজীদের জন্য যারা তাদের নামায থেকে গাফেল থাকে। সূরা মাউন।
৫। কেয়ামতের দিন (যারা দুনিয়াতে নামায আদায় করেনি তাদেরকে) সেজদা করতে বলা হবে অতপর তারা সেজদা করতে পারবে না, তাদের দৃষ্টি থাকবে সেদিন লজ্জায় অবনত, তারা হবে (কঠিন) লাঞ্চনাগ্রস্ত। অথচ তারা যখন সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল তখন তাদেরকে সেজদার জন্য আহবান করা হত। সূরা আল কলম ৪২,৪৩।
৬। যারা পরকাল বিশ্বাস করে তারা এই কিতাবের উপর বিশ্বাস রাখে এবং তাদের নামায সমুহ (আদায় করার মাধ্যমে) যথাযথভাবে হেফাজত করে। সুরা অনআম ৯২।
৭। প্রকৃত সফলকাম সেই ব্যক্তি যে পবিত্রতা অবলম্বন করেছে, আল্লাহর যিকির করেছে এবং নামায আদায় করেছে। সুরা আল-আলা ১৪,১৫।
৮। যে ব্যক্তি আমার উপদেশবাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার জন্য হবে দুনিয়াতে সংকির্ন জীবন এবং বিচার দিবসে আমি তাকে অন্ধ করে উঠাব। সুরা ত্বাহা ১২৪।
৯। হে ঈমানদারগন। তোমাদের ধন সম্পদ সন্তানাদি যেন আল্লাহর স্বরণ থেকে উদাসিন না করে কেননা যারা এসব কারনে আল্লাহর স্বরণ থেকে উদাসিন হয় তারা পরকালে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আল মুনাফিকুন ৯।
১০। জাহান্নামের কারারক্ষিরা (জাহান্নামীদের কান্না শুনে) তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে তোমাদেরকে কোন আমল এই ভয়কর জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছে ? তারা বলবে আমরা নামায আদায় করতাম না। অভাবগ্রস্থদের সাহায্য করতাম না। এবং ধর্মের শত্র“দেরকে তাদের কাজে সাহায্য করতাম। সূরা মোদ্দাসের ৪২,৪৩,৪৪,
সম্মানিত চিন্তাশীল পাঠক, শেষের আয়াতটিতে লক্ষ্য করে দেখুন এখানে জাহান্নামীদের তিনটি বৈশিষ্টের কথা উল্লেখ রয়েছে যার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে নামায বর্জন করা। যে সমস্ত চিন্তাশীল নরনারীর মনোজগতে পরাক্রমশালী মহান রবের ভয় রয়েছে তাদের জন্য উপরোক্ত ১৫টি আয়াতই যথেষ্ট। নামাযের ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআনের এই সমস্ত ভয়ংকর সতর্কবাণী দেখেও যারা ইহা আদায় না করে পৃষ্টপ্রদর্শন করবে কিংবা এই বিধানকে অবহেলার ছুরি দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করবে তাদের স্বরণ করা উচিত এমন এক কঠিন দিবষকে যেদিন মানুষের অন্তর ও চক্ষু সমুহ বিষ্ফোরিত হবে। বস্তুত মনোজগতে যদি নিজের কর্মনীতির জন্য বিশ্বস্রষ্টার নিকট (এক ভয়ংকর দিনে) জবাবদীহিতার অনুভুতি না থাকে তা হলে সমগ্র কুরআনের উপদেশমালাও যদি তাদের নিকট তুলে ধরা হয় তা হলে সেটা তাদের জন্য সামান্যই বিবেচিত হবে। সুতরাং আসুন আর অবাধ্যতা নয়। আর নয় মহাসত্যে পথ থেকে পৃষ্ট প্রদর্শন। জগৎপ্রভুর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য নামায কায়েম করে নিজের সহজাত প্রকৃতির উপর সুবিচার প্রতিষ্টা করি। কারন অতিতে বহু জাতী স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে ইহজগতেই ধংশের অতল তলদেশে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল। আর পরজগতের অনন্ত শাস্তীতো আছেই। অনেক লোকের ধারণা ইহলোকে নামায রোজা ইত্যাদি কেহ যদি না মেনে চলে তা হলে তার মৃত্যু হলে তার আত্বীয় স্বজন তার জন্য মিলাদ মাহফিল কিংবা কুলখানির মাধ্যমে তার জন্য দোয়া করালে তার অপরাধ ক্ষমা হয়ে যাবে। বস্তুত ইহা একপ্রকার শয়তানের ধোকা ব্যতিত আর কিছুই নয় কারন কোন সাহাবী, তাবেয়ী, তাবেতাবেয়ীন ও চার মাযহাবের চার ইমাম একথা বলেননি যে খোদাতায়ালার ফরজ হুকুমগুলো কেহ ইচ্ছাকৃত বর্জন করে চললে তার আত্বীয় স্বজন কিংবা বন্ধু মহলের দোয়া তাকে বাচিয়ে দিবে। সৌদি আরবের একজন বিজ্ঞ মুফতি আল্লামা মোহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন রাহঃ তার নামায ত্যাগকারীর বিধান গ্রন্থে বেনামাযীর জানাজা ও তার জন্য দোয়া দরুদ হারাম বলেছেন। দলিল হিসাবে কুরআনের একটি আয়াত এনেছেন ‘‘আর তাদের কেহ মারা গেলে তার জানাযায় আপনি অংশ গ্রহন করবেন না। তার করবের পাশে দাড়াবেন না। কেননা তারা আল্লাহ ও রাসুলের সাথে কুফরী করেছে। আর তারা মৃত্যু বরন করেছে এমন অবস্থায় যে, তারা ছিল ফাসেক। সুরা তওবা। বেনামাযীদের উপর সাহাবা, তাবেয়ীদের পক্ষ থেকে কুফরের ফতোয়া রয়েছে। চার ইমামের মধ্যে কেহ বলেন কাফের কেহ বলেন ফাসেক তবে বেনামাযীগন যে ফাসেক এই বিষয়ে কোন সাহাবী, তাবেয়ী, তাবেতাবেয়ীন, চার ইমাম, চার তরিকার পীর এবং কোন মুফাসসির, মোহাদ্দেস, কোন মুফতী এবং কোন ইসলামী চিন্তাবিদদের মধ্যে বিগত চৌদ্দশত বৎসরে মতভেদ হয়নি। আর উপরোক্ত আয়াতের শেষের দিকে কিন্তু ফাসেকদের কথাই বলা হয়েছে। সম্ভবত এই যুক্তির আলোকেই লেখক বেনামাযীদের জন্য জানাযা বা দোয়া দরুদ হারাম বলেছেন। এই অভিমতের সঙ্গে যদি আপনি একমত পোষন করতে না পারেন তা হলে এটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যপাড়। এই সমস্ত নেতিবাচক ফতোয়া দ্ধারা কারো কষ্ট পাওয়া অনুচিত কারন বিজ্ঞ ইসলামী চিন্তাবিদগন অনেক চিন্তা গবেষণা করেই একটি অভিমত ব্যক্ত করে থাকেন। এবং এই সমস্ত ফতোয়া দেন তারা ধর্মিয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। এই সমস্ত ফতোয়া পেয়ে মুসলিম সমাজে হৈচৈ সৃষ্টি করাও সমীচীন নয়। আপাত দৃষ্টিতে যদি স্রষ্টার হুকুম পালন করা মুসলিমদের ব্যক্তিগত ব্যপাড় ধরেও নেই তা হলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার অবকাশ কোথায়। আর মাযহাবের ইমামগন এই বিষয়ে আরও অনেক বেশি কঠিন কথা বলেছেন, মুসলিম ভাইদের মানুসিক কষ্টের কথা বিবেচনা করে সেগুলো উক্ত প্রবন্ধে আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই নিয়ে আসিনি। উক্ত প্রবন্ধে কোন ভুল হয়ে থাকলে বিচক্ষন দৃষ্টির কাছে আমার চিন্তা সত্বাকে সমর্পন করছি। এই প্রবন্ধের মাধ্যমে আপনারা কিছুটা উপকৃত হয়ে থাকলে আমার প্রচেষ্টা সার্থক হবে।
No comments:
Post a Comment